ঢাকা, মঙ্গলবার   ২২ জুলাই ২০২৫

‘তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক-২০১৮’ প্রদান অনুষ্ঠিত   

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১৭:৪০, ২৫ মে ২০১৮

Ekushey Television Ltd.

জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক ২০১৮ প্রদান’ শীর্ষক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পিকেএসএফ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান আয়োজ করা হয়।  

অনুষ্ঠানে ঢাকা আহছানিয়া মিশনকে প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে তামাক নিয়ন্ত্রণ পদক ২০১৮ দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমের গুণগত মান, বিস্তৃতি ও প্রভাব বিবেচনা করে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। ডাঃ মোঃ মোস্তফাজামান-কে তার গবেষণার প্রকৃতি, প্রাসঙ্গিকতা এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রকাশনার সংখ্যা বিবেচনা করে প্রকাশনা/গবেষণা ক্যাটাগরিতে পদক প্রদান করা হয়।

পিকেএসএফ-এর সভাপতি ও জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম-এর আহ্বায়ক ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) আব্দুলমালিক, জাতীয় অধ্যাপক।

জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য খাতে সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা উদ্যোগ ও সফলতার কথা তুলে ধরেন। দেশে প্রতি বছর দেড় লক্ষ লোক তামাক জনিত কারণে মারা যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃত তবে এই সফলতা ধরে রাখা সম্ভব হবে না যদি তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা না যায়। তামাক উৎপাদন কমাতে তামাক চাষীদের অন্যান্য লাভজনক অর্থকরী ফসল চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করার প্রতি তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন।

সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে সেই কথা উল্লেখ করে তামাকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। প্রতিমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তামাক বিরোধী কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আজ তামাক ও মাদকের জন্য যে ঝুঁকিতে রয়েছে তার বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে দেশব্যাপী প্রচারণা চালানো প্রয়োজন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথি ব্রিগেডিয়ার (অবঃ) আব্দুল মালিক, জাতীয় অধ্যাপক তামাককে জাতীয় অভিশাপ উল্লেখ করে বলেন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি অর্জন এবং তা ধরে রাখতে হলে দেশকে তামাক নামক অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হবে। তামাকের ব্যবহার হ্রাস করার জন্য মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা অপরিহার্য উল্লেখ করে তিনি সেই আন্দোলনে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে যোগদান করার আহ্বান জানান। তামাকের বিকল্প কৃষি সম্প্রসারণে পিকেএসএফ যে উদ্যোগ নিয়েছে তাকে মডেল হিসেবে গ্রহণ করে সারা দেশে তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করা যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, তামাকের ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা, মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা, তামাক নিয়ন্ত্রণে নীতিনির্ধারনী পর্যায়ে এডভোকেসি করা এই তিনটি উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম। দেশের প্রণীত আইন ও প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তৃণমূল পর্যায়ে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে প্ল্যাটফর্ম। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাবে তামাক বিরোধী কাজ করছে তবে এই কাজে সমন্বয় না থাকায় ফলাফল তেমন ভাবে দৃশ্যমান হয়নি উল্লেখ করে তিনি আশা করেন যে জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করবে এবং এর মাধ্যমে একটি সফল উদ্যোগ নেওয়া যাবে। তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে দল মত নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আবদুল করিম বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-৩ অর্জন, অর্থাৎ বাংলাদেশের সবার সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করার জন্য তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী একটি জাতির প্রয়োজন এবং সেই লক্ষ্যে তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন করেছে। তামাক নিয়ন্ত্রণে আইনের পাশাপাশি প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তামাক উৎপাদন নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে পিকেএসএফ-এর পক্ষ থেকে তৃণমূল কৃষকদের নিয়ে তামাকের বিকল্প আয়বর্ধনমূলক কর্মকান্ড পরিচালনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই উদ্যোগে সরকারি সহায়তা পাওয়া গেলে এই কাজ আরও তরান্বিত করা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম-এর সমন্বয়কারী ড. মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম ও গঠনের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। এছাড়া তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণে পিকেএসএফ কর্তৃক গৃহীত কার্যক্রমের উপর একটি উপস্থাপনা প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করার লক্ষ্যে একটি অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ‘জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্ম’ গঠন করা হয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে এমন সংগঠনসমূহের সমন্বিত উদ্যোগে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, সভাপতি, পিকেএসএফ-কে জাতীয় তামাক বিরোধী প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক এবং ডা. মাহফুজুর রহমান ভূঁঞা, গ্রান্টস ম্যানেজার, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস, বাংলাদেশ ও ভাইস চেয়ারপার্সন, অধীর ফাউন্ডেশন-কে প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়কারী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

একে//এসি  

 

 


Ekushey Television Ltd.

© ২০২৫ সর্বস্বত্ব ® সংরক্ষিত। একুশে-টেলিভিশন | এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি